মোবাইল দিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতে কি কি লাগে এই বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের এই পোস্ট। এই পোস্টে মোবাইল দিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতে যেসকল সরঞ্জাম ও অ্যাপ এর প্রয়োজন হবে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করলাম।
সকল ইউটিউবার বন্ধুদের সালাম এবং শুভেচ্ছা। আশা করি সকলে ভালো আছেন । আল্লাহর মেহেরবানীতে আমিও ভালো আছি। আমাদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট এবং কমেন্টের মাধ্যমে অনেকেই জানতে চেয়েছে মোবাইল দিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতে কি কি লাগে একটু বিস্তারিত জানান । তাই আপনাদের কমেন্টের জবাব দিতে পোস্টটি লিখতে বসে গেলাম।
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতে কি কি লাগে
ইউটিউবিং শুরু করতে প্রথমেই প্রয়োজন একটি মোবাইল ফোন। যদি মোবাইলের মাধ্যমে ইউটিউবের সমস্ত কাজ করতে চান তাহলে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার মধ্যে একটি মোবাইল ডিভাইস ক্রয় করুন। অনেকেই বলতে পারেন ভাই আর্থিক সংকট এত টাকা দিয়ে মোবাইল কেনা আমার পক্ষে সম্ভব না। ভাই আপনার এই প্রশ্নের উত্তর হলো ১৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল দিয়ে কাজ করতে গেলে অনেক সমস্যা হয় আমার নিজেরও এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে। অনেক প্রয়োজনীয় অ্যাপ কাজ করে না, যেমন :
• অ্যাপ ইন্সটল হয় না
• ইন্সটল হলেও মোবাইল সেটের গতি কমে যায়
• ইন্টারনেট চালু করলে মোবাইল সেট স্বাভাবিক হতে অনেক সময় নেয় ইত্যাদি।
অনেকই বলতে পারেন ভাই আপনিতে কোনো মোবাইলের নাম সাজেশন করলেন না। আমার উত্তর হলো আমার মনে হয় এখনকার নতুন প্রজন্ম আমার থেকেও অনেক টেলেন্ট তাই আমি কোনো মোবাইলের নাম সাজেশন করলাম না। আপনি যদি মোবাইল সম্পর্কে ধারণা কম থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে নিয়ে জান এবং একটু ভালো ব্যান্ড বা কোম্পানির মোবাইল কিনুন।
ইউটিউব ভিডিও বানানোর জন্য মাক্রোফোন নির্বাচন
ইউটিউবের ভিডিওর ভয়েস সুন্দর করে রেকর্ড করতে ভালো একটি মাক্রোফোন প্রয়োজন। আমি অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে অসংখ্য মাক্রোফোন দেখলাম ভালোর কোনো শেষ নেই কারণ যতোবেশি টাকা ততো বেশি উন্নত। তবে প্রাথমিক অবস্থায় আপনি (Boya m1) ব্যবহার করতে পারেন। (Boya m1) কম টাকায় সবচেয়ে ভালো একটি মাক্রোফোন এবং এই মাক্রোফোনটিতে ভয়েসও অনেক সুন্দর রেকর্ড হয়। বাংলাদেশী একটি ই-কমার্স সাইট বিডি শপ (BDSHOP.COM) এই সাইট থেকে (Boya m1) কিনতে পারেন। এই সাইট থেকে অরিজিনাল পোডাক্ট পাওয়া যায় দামেও কম।
ইউটিউবের জন্য ট্রাইপড নির্বাচন :
ইউটিউবের ভিডিও তৈরি করতে একটি ট্রাইপড প্রয়োজন হয় কারণ ট্রাইপড ছাড়া আপনার ডিভাইসট ইস্থির থাকে বাজে সাউন্ড আসতে পারে ইত্যাদি সমস্যা হয়। আমি ট্রাইপড কোন নাম সাজেশন করলাম না আমি একটি লিংক দিয়ে দিচ্ছে সেই লিংকে প্রবেশ করে ট্রাইপড এবং দাম দেখে আপনি ক্রয় করে নিন – ট্রাইপড কালেকশন
ইউটিউব ভিডিও বানাতে যে ধরনের সেটাপ করতে হবে জেনে নিন –
ইউটিউবের ভিডিও তৈরি করার জন্য কিছু সেটাপ করতে হয় তবে প্রাথমিক অবস্থায় বেশি টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন নেই। আপনি কাপড়, পর্দা, পিলাইবোর্ড, এল ই ডি লাইট ইত্যাদি দিয়ে একটি সাধারণ সেটাপ করে নিতে পারবেন। এছাড়াও ইউটিউব ভিডিও তৈরির সেটাপ সম্পর্কে ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও আছে সার্চ করে দেখেন এবং সেভাবে তৈরি করার চেষ্টা করুন আশা করি একদিন সফল হবেন।
উপরে আমরা যা জানলাম তাহলো মোবাইল দিয়ে ভিডিও সুট করবো। সাউন্ড রেকর্ড করবো (Boya m1) দিয়ে এবং প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণ কাপড়, LED লাইট ইত্যাদি দিয়ে ইউটিউবের ভিডিও তৈরি শুরু করতে পারেন।
ইউটিউবের ভিডিও সুট – ভিডিও এডিট ও ভিডিও আপলোড করতে যে অ্যাপগুলো প্রয়োজন পড়ে –
ভিডিও সুট :
আমরা যারা মোবাইল দিয়ে ভিডিও সুট করি তাদের জন্য একটি ক্যামেরা অ্যাপের প্রয়োজন হয়। ক্যামেরা অ্যাপটির নাম : ওপেন ক্যামেরা (Open Camera)। এই অ্যাপ দিয়ে ভিডিও সুট করলে মোবাইলের ক্যামেরার থেকে অনেকটাই কোয়ালিটি ভালো হয়।
আপনারা যারা স্কিন রেকর্ড ভিডিও তৈরি করতে চান তাদের জন্য আমার সাজেশন (XRecorder) অ্যাপ। এই অ্যাপ দিয়ে কোয়ালিটি ফুল স্কিন রেকর্ড ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এছাড়াও স্কিন রেকর্ড ভিডিও তৈরি করার জন্য আরও অসংখ্য অ্যাপ আছে আপনি চাইলে ব্যবহার করতে পারেন।
ভিডিও এডিট :
আপনারা যারা মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিট করতে চান তাদের জন্য সাজেশন (KineMaster Lite) ভিডিও এডিটিং অ্যাপ। এই অ্যাপ দিয়ে সহজে ভিডিও এডিট করা যায়। আপনারা যদি এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চান তাহলে সরাসরি আমার ফেসবুক পেজে মেসেজ করুন আমি লিংক দিয়ে দেবো।
ভিডিওর সাউন্ড এডিট :
মোবাইলে ভিডিওর সাউন্ড এডিট করতে একটি অডিও ইডিটর অ্যাপ লাগবে আমার সাজেশন (Lexis Audio Editor) এই অ্যাপ। এছাড়াও গুগল প্লে স্টোরে অসংখ্য অডিও ইডিটর অ্যাপ আছে ডাউনলোড করে বাস্তবে কাজ করে দেখতে পারেন।
উপরের অ্যাপগুলো দিয়ে প্রাথমিকভাবে আপনার ভিডিও এডিট করা হয়ে যাবে। তারপরে দরকার পড়বে থাম্বনেইল তৈরি করার অ্যাপ। ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইল তৈরি জন্য অসংখ্য পাওয়া যায় তবে আমার কাছে (PixelLab) এই ভালো লেগেছে। আমি অনলাইনে অনেক ফটো তৈরির অ্যাপ দেখেছি তবে এই অ্যাপটির ব্যবহার আমার কাছে সহজ মনে হয়েছে। তাই আপনাকে আমি ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইল তৈরি করার জন্য (PixelLab) অ্যাপটি ব্যবহার করতে বলবো।
ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইল তৈরি করতে অনেক সময় ফটোর ব্যাকরাউন্ড পরিবর্তন করতে হয়। আপনাদের আমি ভিডিওর ব্যাকরাউন্ড পরিবর্তন করার জন্য (Remove.bg) এই ওয়েবসাইট সাজেশন করলাম। এই ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই যেকোনো ছবির ব্যাকরাউন্ড পরিবর্তন করতে পারবেন।
এগুলো পড়তে পারেন –
আমি আশা করি মোবাইল দিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতে কি কি লাগে এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতখন সময় ব্যয় করে আমার এই পোস্টটি যারা পড়েছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এই পোস্ট সম্পর্কে আপনাদের কোনো মতামত থাকলে কমেন্টে লিখে জানাবেন আমি আপনাদের মতামতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবো।
পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না …